পুতুলের দ্বীপের অজানা কাহিনী

Published on by আদিবা হক

ইসলা ডি লাস মুনিকাস নামে পরিচিত এই পুতুলের দ্বীপ। ছিন্ন মাথা, অঙ্গ-প্রতাঙ্গহীন, চোখ উঠানো ইত্যাদি অবস্থায় বিভিন্ন পুতুল দিয়ে দ্বীপটি আচ্ছাদিত। সেখানে চলাচলের সময় পুতুলগুলো দেখলে মনে হয় সবদিক থেকেই পুতুলগুলো যেন পর্যটকের দিকে তাকিয়ে আছে। পুতুলের দ্বীপ একটি অস্বাস্থ্যকর যায়গা।

অনেক বছর আগে দ্বীপের পাশের খালে একটি মেয়ে শিশু মারা যায়। সেই মেয়েটির স্মৃতি হিসেবে সেখানে শত শত পুতুল গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এই আকর্ষণীয় ও ভয়ানক পর্যটন স্থানটি মেক্সিকোতে অবস্থিত। মেক্সিকো শহরের ১৭ মাইল দক্ষিণে জসিমিল্কো খাল শহরে অবস্থিত।

দ্বীপটি এখন বাগান হিসেবেই বেশী পরিচিত। বাগানের নাম “জুলিয়ান সান্টানা ব্যাড়েরা রাখা হয়”। খালে বসবাসকারী এক নির্জনবাসী এর নামানুযায়ী এই বাগানের নাম রাখা হয়।

১৯৯০ সালে তার(সান্টানা ব্যাড়েরা) এই উদ্ভট সৃষ্টি স্থানীয় কাউন্সিল পরিষ্কার করতে আসেন। তখন থেকেই এই স্থানটি পর্যটক আকর্ষণে পরিণত হয়।

সান্টানা ব্যাড়েরা তার এই আতঙ্কজনক দ্বীপকে সেই শিশু মেয়েটিকে উৎসর্গ করেন। তিনি তার বাড়ির কাছের খালে মেয়েটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করেন।

এর কিছুদিন পর সেই একই স্থানে তিনি একটি পুতুল খুঁজে পান। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পুতুলটির ভিতর সেই মেয়েটির আত্মা রয়েছে। সে ঐ পুতুলটি গাছের সাথে ঝুলিয়ে দেয়। এর পর থেকেই তিনি এই দ্বীপটির নকশা বদলীয়ে ফেলেন।

তারপর, বছরের পর বছর ধরে তিনি বিভিন্ন আবর্জনা থেকে, ঐ খালের আসেপাশে থেকে বিভিন্ন ভাঙ্গা পুতুল সংগ্রহ করে নিজেদের বাসার দেয়ালে ও গাছে পুতুলগুলো ঝুলিয়ে রাখে। তিনি এই কাজগুলো মেয়েটির স্মারক হিসেবে করতে থাকেন।

পুতুলের এই দ্বীপ আবিষ্কার হবার পর সান্টানা ব্যাড়েরা একজন স্থানীয় সেলেব্রিটি হয়ে উঠেন। সকল পর্যটকেরা তার জন্য নষ্ট পুতুল নিয়ে যেত, যার অঙ্গ ভাঙ্গা থাকত নাহলে চোখ উঠানো থাকত। একশতটি পুতুল লাগানোর পর তার এই অভিযাত্রা সমাপ্ত হয়।

২০০১ সালে সান্টানা ব্যাড়েরা সেই একই খালে নিমজ্জিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু, আশ্চর্য হলেও সত্য তিনিও সেখানেই মারা যান, যেখানে ঐ মেয়েটির লাশ পাওয়া গিয়েছিল।

এখনও পর্যন্ত সে স্থানে পুতুলগুলো সেভাবেই সংযুক্ত করা আছে, যেভাবে সান্টানা ব্যাড়েরা রেখে গিয়েছেন। এখন এই যায়গাটি পর্যটকদের জন্য অনেক আকর্ষণীয়।

পুতুলের দ্বীপের অজানা কাহিনী

পুতুলের দ্বীপের অজানা কাহিনী

To be informed of the latest articles, subscribe:
Comment on this post